ঋণের টাকা না পেয়ে গ্রাহকের ঘরে তালা দিলেন এনজিও কর্মী
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ঋণের কিস্তির টাকা না পেয়ে এক গ্রাহকের ঘরে বেসরকারি একটি ঋণদাতা সংস্থার (এনজিও) কর্মীরা তালা দিয়েছেন। গত শুক্রবার বিকেলে ঘরে তালা দেওয়ার পর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তিন দিন ধরে বাইরে থাকছে ওই পরিবারটি। উপজেলার চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের পুটিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান সোপিরেট হাইমচর শাখার ক্রেডিট মাঠ কর্মকর্তা আতিকুর রহমান এ তালা লাগিয়েছেন। বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘কিস্তির টাকার জন্য বাড়িতে গেলে তাঁরা টাকা দিতে পারেননি। তাই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরামর্শে বসতঘরে তালা লাগিয়েছি।’
ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়া মাকছুদা বেগম ফরিদগঞ্জ উপজেলার পুটিয়া গ্রামের সবজি বিক্রেতা বোরহান সওদাগরের স্ত্রী।
গ্রাহক মাকছুদা বেগম জানান, সোপিরেট এনজিও থেকে তারা এক লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করেছেন। প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা হারে ঋণ পরিশোধ করে ৫২ হাজার টাকা ইতিমধ্যে পরিশোধ করেছেন। সম্প্রতি বর্ষকালের বৃষ্টির কারণে তাঁর স্বামী সবজি ও দেশীয় ফল বিক্রির উদ্দেশ্যে যেতে না পারায় এনজিওটির ২ কিস্তির টাকা দিতে পারেননি।
মাকছুদা বেগম বলেন, ‘সোপিরেট এনজিওর বইতে আমাদের সঞ্চয়ের টাকা জমা থাকলেও তারা আমাদের সঞ্চয় থেকে টাকা কাটেনি। ক্ষিপ্ত হয়ে এনজিওর লোকজন আমাদের ঘরে তালা লাগিয়েছে। তিন দিন ধরে ঘরে প্রবেশ করতে পারি না। চার সন্তান নিয়ে ঘরের দরজার সামনে অনাহারে জীবনযাপন করতে হচ্ছে।’
সোপিরেট এনজিওর ক্রেডিট প্রোগ্রামের শাখা ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ঋণ গ্রহীতার ঘরে তালা লাগানোর কোনো নিয়ম নেই, এটা পরিস্থিতির কারণে হয়েছে।’
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাজাহান বলেন, ‘এই সংস্থাটি ঋণের টাকা না পেলে আমাকে জানানো উচিত ছিল, প্রয়োজনে আমি ঋণের টাকা পরিশোধের ব্যবস্থা করে দিতাম, কিন্তু তারা ঘরে তালা দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো কাজ করতে পারে না।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌলি মন্ডল বলেন, ‘বিষয়টি আপনার মাধ্যমে আমি জেনেছি, বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
0 মন্তব্যসমূহ